ভারতীয় মন্দির গুলোতে দুটো ব্যাপার আপনার দৃষ্টি কাড়বেই। এক, সেখানকার বানর আর দুই ভিক্ষুক। নানান ধরণের আর কিসিমের ভিক্ষুক চোখে পড়ে সেখানে। ২০০৮ এ শেষ বার যখন দার্জিলিং গেলাম সেখানকার মহাকাল মন্দিরের ভিক্ষুকদের খুব কাছে থেকে খেয়াল করেছি। এর মাঝে পাশাপাশি বসা তিন জন আমার দৃষ্টি কেড়েছিলো।
প্রথম ভিক্ষুকের ছবি দেখুন, জাতে মুসলমান, কিছুটা শান্ত শিষ্ট ভাব নিয়ে চুপচাপ একপাশে বসেছিলো, আমি ছবি তুলতে গেলেই ভুরু কুঁচকিয়ে আমার দিকে তাকালো, হয়তো মনে মনে ভাবছিলো আমি না আবার তার ব্যবসার কোন ক্ষতি করে ফেলি।
দ্বিতীয় জন জগৎ সংসারে নিষ্পৃহ মনে হলেও এর গল্প ইন্টারেস্টিং। আমি যখনই ছবি তুলতে যাই তখনই ক্যামেরা থেকে মুখ সরিয়ে নেয়। ভিক্ষা তার পারিবারিক ব্যবসা। ভোর ছয়টা বাজলেই এক টিফিন ক্যারিয়ার ভর্তি খাবার, একটা লাঠি, এক বোতল পানি আর হাতে ছাতা নিয়ে মন্দিরে উঠার সিড়িতে জায়গা করে নেয়। মাথায় লাল সালু জড়িয়ে আর কপালে সিঁদুরের টিপ পড়ে শুরু হয় ভিক্ষার আশায় বসে থাকা। ঠিক সুর্য ডোবার সাথে সাথে পাশের মসজিদ থেকে আজ্বান ভেসে এলে আবার হাঁটতে হাঁটতে নেমে আসে।
তৃতীয় জন বরঞ্চ এদের উলটো, প্রানবন্ত, দর্শনার্থী দেখলে ডেকে কাছে আনে, লাল নীল সুতা কিংবা ফিতা ধরিয়ে দেয় হাতে, বিনিময়ে যা পায় তার পরিমান অন্যদুজনের তুলনায় বেশি। আমি ছবি তুলতে গেলে হাত তুলে থামালো, হিন্দিতে বললো “একটু সেজেগুঁজে নিই”, এরপর পোজ দিয়ে ছবি তুলতে দিয়ে আবার দেখতে চাইলো কেমন উঠেছে, সেই সাথে জেনে নিলো কোন পত্রিকায় ছাপা হবে কী না।
ছবি তিনটা তুলেছি ২০০৮ এর অক্টোবরের ১১ তারিখ।
শনিবার, জুলাই ০৩, ২০১০
দার্জিলিং এ ভিক্ষুক
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন