সোমবার, জুলাই ০৫, ২০১০

Feast of La Mercè 2009

The giants of Barcelona.প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তায় বার্সিলোনা সব উৎসবের সেরা উৎসব “Feast of La Mercè” পালন করে থাকে। ওদের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষ কোনো না কোনোভাবে এ উৎসবের সাথে সংশ্লিষ্ট। বার্সিলোনার অত্যন্ত জনপ্রিয় এ উৎসবের সময় পুরো শহরই উৎসবের মঞ্চে রূপান্তরিত হয়। ঐতিহ্যবাহী লোক কাহিনিভিত্তিক নাটক, পালা, গান থেকে শুরু করে আধুনিক কনসার্ট কিংবা নাচের অনুষ্ঠান সেপ্টেম্বরের ২৩ থেকে ২৬-২৭ তারিখ পর্যন্ত বার্সিলোনাবাসীর রাতের ঘুম কেড়ে নেয়।

৬০০ মঞ্চের এ বিশাল আয়োজন কিন্তু কোথাও কোনো বিশৃংখলা নেই। আর তা সম্ভব হয় স্থানীয়দের সতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আর প্রশাসনের সুনিপুণ তত্বাবধানে। এক বছরের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয় পরবর্তী বছরের পরিকল্পনা, আর এতে অর্থ যোগানোর জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ উৎসবের সমস্ত আয়োজন সকল দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তাই পর্যটকদের কাছে এর আবেদন অনেক বেশি।

২০০৯ এর সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ দুপুরের পর গেস্টহাউসে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, এমন সময় বাইরে অনেক্ষণ যাবৎ বিউগল, বাঁশি আর ড্রামের একটানা চলমান সুরে বুঝতে পারলাম সামনের রাস্তায় কোনো আনন্দমিছিল হচ্ছে। কৌতূহল মেটাতে বারান্দায় আসতেই দেখি এলাহি কারবার। ছোট্ট গলি মতন রাস্তার দুপাশে হাজার হাজার মানুষ গিজগিজ করছে আর এর মাঝখান দিয়ে হেসে খেলে বাজনা বাজিয়ে নেচে বেড়াচ্ছে দৈত্যাকৃতির সব মানুষ। একদলের পেছনে আরেক দল, তারপর আরো, এর কোনো বিরাম নেই। বারান্দা থেকে কিছুক্ষণ দেখে নিচে নামলাম, যতদূর চোখ যায় কেবল মানুষ আর মানুষ, ছেলে, বুড়ো, বাচ্চা সবাই আছে, এরই মাঝে ছোটরা ফুটপাথ ধরে বসে গেছে আর বড়রা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছে।

একটার পর একটা বাজনা বাজিয়ের দল আসছে, এদের মধ্যমণি হয়ে আছে দৈত্যাকৃতির কোনো ঐতিহাসিক চরিত্র। রাজা-রানী, জলদস্যু, বীর যোদ্ধা, নাবিক, আবিষ্কারক, নর্তকী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের চেহারাধারী এদের কেউ কেউ আবার চারদিকে চকোলেট বিলিয়ে দিচ্ছে।

কয়েক কিলোমিটার লম্বা এ মিছিল আমার সামনে দিয়ে যেতে দুঘন্টার উপর সময় নিলো।

আজকের ছবির গল্প এই দৈত্যাকার পুতুল আর তাদের মিছিল নিয়েই, চলুন তাদের কিছু ছবি দেখা যাক।


The giants of Barcelona.The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

The giants of Barcelona.

শনিবার, জুলাই ০৩, ২০১০

দার্জিলিং এ ভিক্ষুক

ভারতীয় মন্দির গুলোতে দুটো ব্যাপার আপনার দৃষ্টি কাড়বেই। এক, সেখানকার বানর আর দুই ভিক্ষুক। নানান ধরণের আর কিসিমের ভিক্ষুক চোখে পড়ে সেখানে। ২০০৮ এ শেষ বার যখন দার্জিলিং গেলাম সেখানকার মহাকাল মন্দিরের ভিক্ষুকদের খুব কাছে থেকে খেয়াল করেছি। এর মাঝে পাশাপাশি বসা তিন জন আমার দৃষ্টি কেড়েছিলো।

Beggars at stairway of Mahakal temple

Beggar at stairway of Mahakal Temple

Beggars at stairway of Mahakal temple

প্রথম ভিক্ষুকের ছবি দেখুন, জাতে মুসলমান, কিছুটা শান্ত শিষ্ট ভাব নিয়ে চুপচাপ একপাশে বসেছিলো, আমি ছবি তুলতে গেলেই ভুরু কুঁচকিয়ে আমার দিকে তাকালো, হয়তো মনে মনে ভাবছিলো আমি না আবার তার ব্যবসার কোন ক্ষতি করে ফেলি।

দ্বিতীয় জন জগৎ সংসারে নিষ্পৃহ মনে হলেও এর গল্প ইন্টারেস্টিং। আমি যখনই ছবি তুলতে যাই তখনই ক্যামেরা থেকে মুখ সরিয়ে নেয়। ভিক্ষা তার পারিবারিক ব্যবসা। ভোর ছয়টা বাজলেই এক টিফিন ক্যারিয়ার ভর্তি খাবার, একটা লাঠি, এক বোতল পানি আর হাতে ছাতা নিয়ে মন্দিরে উঠার সিড়িতে জায়গা করে নেয়। মাথায় লাল সালু জড়িয়ে আর কপালে সিঁদুরের টিপ পড়ে শুরু হয় ভিক্ষার আশায় বসে থাকা। ঠিক সুর্য ডোবার সাথে সাথে পাশের মসজিদ থেকে আজ্বান ভেসে এলে আবার হাঁটতে হাঁটতে নেমে আসে।

তৃতীয় জন বরঞ্চ এদের উলটো, প্রানবন্ত, দর্শনার্থী দেখলে ডেকে কাছে আনে, লাল নীল সুতা কিংবা ফিতা ধরিয়ে দেয় হাতে, বিনিময়ে যা পায় তার পরিমান অন্যদুজনের তুলনায় বেশি। আমি ছবি তুলতে গেলে হাত তুলে থামালো, হিন্দিতে বললো “একটু সেজেগুঁজে নিই”, এরপর পোজ দিয়ে ছবি তুলতে দিয়ে আবার দেখতে চাইলো কেমন উঠেছে, সেই সাথে জেনে নিলো কোন পত্রিকায় ছাপা হবে কী না।
ছবি তিনটা তুলেছি ২০০৮ এর অক্টোবরের ১১ তারিখ।